রমযান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানুন ২০২২
লেখকঃ রিজভী আহমেদ
অন্যান্য বছরের মাসের মধ্যে মাহে
রমযানের অবস্থান
আলাদা। এ মাসের আছে
এমন কিছু বিশিষ্টতা, যা অন্যান্য মাসের নেই।
ঐসব বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যতই চিন্তা করা যায় ততই এ মাসের মহিমা ও গুরুত্ব প্রকাশিত হয়। প্রথম বিশিষ্টতা এই যে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে এমাসের বৈশিষ্ট্য ঘোষণা করেছেন। এটা ঠিক যে, কুরআন মাজীদে ‘আশহুরে হুরুমে’রও উল্লেখ আছে। ইরশাদ হয়েছে (তরজমা) ‘মাসের সংখ্যা আল্লাহর নিকট বারো...। তন্মধ্যে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। (সূরা তাওবা ৯ : ৩৬) এ চার মাস হল রজব, যিলকদ, যিলহজ্ব ও মুহাররম।
ঐসব বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যতই চিন্তা করা যায় ততই এ মাসের মহিমা ও গুরুত্ব প্রকাশিত হয়। প্রথম বিশিষ্টতা এই যে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে এমাসের বৈশিষ্ট্য ঘোষণা করেছেন। এটা ঠিক যে, কুরআন মাজীদে ‘আশহুরে হুরুমে’রও উল্লেখ আছে। ইরশাদ হয়েছে (তরজমা) ‘মাসের সংখ্যা আল্লাহর নিকট বারো...। তন্মধ্যে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। (সূরা তাওবা ৯ : ৩৬) এ চার মাস হল রজব, যিলকদ, যিলহজ্ব ও মুহাররম।
যদিও চার
সম্মানিত মাস বলতে এই মাসগুলিই সুবিদিত এবং হাদীসের বর্ণনা
অনুসারে এখানে এ চার মাসকেই বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এ মাসগুলির নাম কুরআন মাজীদে উল্লেখিত হয়নি। এদিক থেকে মাহে
রমযান বিশিষ্টতার অধিকারী। মাহে রমযানের নাম
উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা এর ফযীলত ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে-
মাহে রমাযান, যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন যা মানুষের জন্য হেদায়েত ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা এবং (যা আসমানী) হেদায়েত ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নির্ণয়কারী (সূরা
বাকারা ২ : ১৮৫) দ্বিতীয় বিশিষ্টতা, কুরআন-হাদীসে উল্লেখিত
বিভিন্ন ফযীলত। কুরআন মাজীদে ও হাদীস শরীফে রমযান মাসের যে ফযীলতগুলো উল্লেখিত হয়েছে
তা মূলত দু’ধরনের :
১. তাকভীনী ২.
তাশরীয়ী। ‘তাকভীন’
ও ‘তাশরী’ শব্দ দুটি
আরবী। দুটো শব্দই
আল্লাহ তাআলার আদেশ ও ফয়সালা নির্দেশ করে। তবে দু’ধরনের আদেশ। আল্লাহ তাআলার বিধানমূলক বা করণীয়-বর্জনীয় সংক্রান্ত আদেশকে তাশরীয়ী আদেশ বলে। যেমন ঈমান আনা ও শিরক ও কুফর বর্জনের আদেশ সালাত ও যাকাতের আদেশ, সওম ও সাদাকার আদেশ ইত্যাদি। এগুলো হচ্ছে তাশরীয়ী বিধান বা বান্দার করণীয়-বর্জনীয় সংক্রান্ত বিধান।পক্ষান্তরে যেসকল
আদেশ ও ফয়সালা বান্দার কর্তব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, বরং সৃজন, বর্ধন মর্যাদা ও
বিশিষ্টতা দান, লালন ও বিলুপ্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেগুলোকে বলা হয় তাকভীনী ফয়সালা।
যেমন আল্লাহর আদেশেই মানুষের জীবন, আল্লাহর আদেশেই মৃত্যু। আল্লাহর আদেশেই সুস্থতা, অসুস্থতা,
সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পদ, সম্মান- অসম্মান ইত্যাদি সব কিছু। তাঁরই আদেশে উত্থান-
পতন, পরিবর্তন,
পরিবর্ধন তথা বিশ্বজগতের সবকিছু। আল্লাহ
তাআলার এই আদেশ ও ফয়সালাকে বলে
তাকভীনী আদেশ।
মাহে রমাযানের
যেসব ফযীলত
কুরআন মাজীদ ও
হাদীস শরীফে ঘোষিত হয়েছে তাতে যেমন তাকভীনী বিষয় আছে তেমনি আছে তাশরীয়ী বিষয। তাকভীনী বিষয়ের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা এই মাসকে নির্ধারিত করেছেন তাঁর মহিমান্বিত কালাম নাযিলের জন্য, যা জগদ্বাসীর জন্য হেদায়েত এবং হক্ব ও বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী। আর এ মোবারক মাসে একটি রজনীকে এমন মর্যাদা ও মহিমা দান করেছেন যে, তা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এ দুই
বৈশিষ্ট্য কুরআন মাজীদে পরিষ্কারভাবে
উল্লেখিত
হয়েছে।
আর হাদীস শরীফে নবী সাল্লাল্লাহু আলাআইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
যখন মাহে রমাযানের
আগমন হয় তখন
জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, এবং
জাহান্নামের
দরজাসমূহ
বন্ধ করা হয়। আর শয়তানদের
শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। (সহীহ মুসলিম,
হাদীস ১০৭৯) এই হাদীস শরীফও
সংবাদ দান করে যে, এ মাসে উর্ধ্ব জগতে এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সকল নেয়ামতের
স্থান জান্নাতের
দরজাসমূহ আল্লাহর আদেশে খুলে দেওয়া হয়। আর চির অশান্তির স্থান
জাহান্নামের
দরজাসমূহ
বন্ধ করা হয়।
এ যেন পরওয়ারদেগারের
আহবান -কে আছ, জান্নাতে যেতে চাও, আমি তাকে জান্নাতে দাখিল
করব। কে আছ জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে চাও, আমি তাকে মুক্তি দান করব। অতএব বান্দার কর্তব্য
গুনাহ ও পাপাচার থেকে পবিত্র হয়ে
চিরমুক্তির পরওয়ানা
হাসিল করা। বিতাড়িত শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে অন্যায় অনাচারের এক
বড় সূত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। মোটকথা গোটা মাসজুড়ে রহমত ও
মাগফিরাতের ফল্গূধারা প্রবাহিত হয় এবং মুক্তির
অনুকূল পরিবেশ
বিরাজ করে। এগুলি হচ্ছে এই মোবারক মাসের তাকভীনী
বৈশিষ্ট্য যা তাশরীয়ী
বিধানসমূহ পালনে
সহায়ক হয়। এ মাসের তাশরীয়ী
বৈশিষ্ট্য কী? এ
মাসের তাশরীয়ী
বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, দু’টি গুরুত্বপূর্ণ
ইবাদত সওম ও তারাবী এ মাসে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। সূরা বাক্বারার যে আয়াতে মাহে রমযানের
ফযীলত ঘোষিত
হয়েছে তার আগের দু’টি আয়াতই হচ্ছে সওম সংক্রান্ত ঐ প্রসিদ্ধ আয়াত, যা এ মাসে মিম্বরে মিম্বরে পঠিত হয়-
ﺍﻟ
আজকের আর্টিকেল টা ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক আইডিতে ফলো করুন । আইডি লিংক :